লালমনিরহাট জেলার এসএসসি, ভোকেশনাল, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে লালমনিরহাটের চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের আয়োজনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার-এঁর সভাপতিত্বে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ জাকিয়া সুলতানা ও হরিদেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান-এঁর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম এনডিসি। বক্তব্য রাখেন জিপিএ-৫ অর্জনকারী শিক্ষার্থী বাঁশকাটা দয়ারটারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শেখ মোঃ আবু হোরায়রা সামীম, শাহ গরীবুল্লাহ মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাসিয়াত তাসনিম বর্ণ, শিয়ালখোয়া এসএসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিফাতুন জান্নাত ঐশী, সরকারী আদিতমারী গিরিজা শংকর মডেল স্কুল এন্ড কলেজের রেশমী সরকার রুম্পা, ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের মোছাঃ আফরিন বসুনিয়া মিতু, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোঃ তরিকুল ইসলাম, লালমনিরহাট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফিরোজ হোসেন, লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মজিবুর রহমান প্রমুখ। এ সময় লালমনিরহাটের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম এনডিসি তার বক্তব্যে বলেন, মেধাবীদের বিকাশে বিনিয়োগটা হচ্ছে শ্রম, তবু বই পড়ি। ঢাকা শহরে কোন একদিন ফুটপাতে হাঁটছি হঠাৎ বৃষ্টি চলে এলো একটি বইয়ের দোকানে তবুও বই পড়ি। এখন এই জিনিসটা নষ্ট করে দিচ্ছে।
তিনি সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে বলেন, ফেসইবুক এই হোয়াটসঅ্যাপ এই মেসেঞ্জার সমস্যাটাকে পিছন দিক থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জাতীয় স্বভাবই এটি, আমার বাড়ির পাশের প্রতিবেশী যদি একটু এগিয়ে যায় কি করে তাকে পেছন থেকে টেনে ধরা যায় এ রকম মন মানসিকতা আমাদের।
আবু সাইদ জুলাই, আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার আন্দোলনে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দিলেন। দেশের জন্য জাতির জন্য তখন কিন্তু সমস্ত ছাত্র জনতাসহ অভিভাবকবৃন্দ সবাই কিন্তু মাঠে নেমে এসেছিল। আমরাও ছিলাম কেন ছিলাম কারণ আমার সন্তানেরা ঐদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হিসাবে মাঠে ছিলেন। টোটাল এই আন্দোলনে আমরা জানি সরকারি পরিসংখ্যান প্রায় ৮শ শহীদ হয়েছেন। আমাদের সন্তানেরা জীবন দিয়েছেন।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বইয়ের পাতায় নেশা করতে হবে। তবে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। যার কাছে যত তথ্য থাকবে সে এগিয়ে যাবে। আবার সেই পুরনো সিলেবাসে ফিরে যাচ্ছে প্রমাণ করতে হবে। এই যে তোমাদের যাত্রা যে শ্রমটা দিয়েছো এটাকে আরো বেগবান করবা। ইন্টারমিডিয়েট খুব কঠিন খুব কঠিন বিশেষ করে যারা সাইন্সে লেখাপড়া করবা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখো বিমান চালানোর স্বপ্ন এবং সব কিছু নির্ধারিত হবে। ফেসবুকে বিদায় দিতে হবে মোবাইল পারলে ফেলে দিতে হবে, এক কথায় পড়াশোনায় মনোনিবেশ কর। তাহলে তোমাদের এই জিপিএ ফাইভ পাওয়াটা সার্থক হবে।
সভাপতির বক্তব্যে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, তোমাদের ও অভিভাবকদেরকে বলি আপনাদের অর্জনের মাধ্যমে আজকে অর্জন শিক্ষকদেরকে বলি আপনাদের মাধ্যমে আজকে অর্জন। যারা যেটি পায় নাই এই প্লাটফর্মে যারা আসতে পারে নাই তারাও কিন্তু ভালো মানুষ। কিন্তু এই যে একটা প্লাটফর্ম এই যে একটা প্যাটার্ন এই প্যাটার্ন এর মধ্যে তোমরা ঢুকে গেছো। অস্ট্রেলিয়ায় কেউ লালমনিরহাটে কেউ ঢাকায় কেউবা রাশিয়ায় কেউবা নেশায় কেউবা ফেসবুকের সেই হেডকোয়ার্টারে কেউ বা বিজ্ঞানী কেউ বা ডাক্তার কেউবা ইঞ্জিনিয়ার কেউ আমার মতো জেলা প্রশাসক কেউবা জনাব মোঃ শহিদুল ইসলাম স্যারের মতো। তখন মনে পড়বে এই সময়। কথায় আছে না সময় গেলে সাধন হবে না কথা কিন্তু সত্য। তোমরা মাথা নত করবেনা তোমরা জ্ঞানের সাধন করবে সেই সময়টাকে যেতে দেবে না। মেধাবীরা শুধুমাত্র নিজের জন্য নয়, দেশের কল্যাণেও কাজ করবে।
উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৪৯জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। কৃতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতিতে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেষ্ট ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।